মঙ্গলবার, ২৮ মে, ২০২৪

সালাত আদায় ও অতপর :

 সালাত আদায় ও অতপর :

----------------------------------------

বেশ কিছুদিন আগে , ঢাকার সংসদ ভবন রো‌ডে আসাদ‌ গেইট যাওয়ার প‌থে বা‌সে ব‌সে‌ছি‌লাম ট্রা‌ফিক জ্যা‌মে। বাস থেকে দেখলাম লোক‌টি পিকআপ ভ্যা‌নে ব‌সে মাগ‌রি‌বের নামায পড়‌ছি‌লেন (আমার নিজের হাতের মুঠো ফোনের ক্যামেরায় তোলা ছবি সংযুক্ত করা হয়েছে) ! 

মাশাল্লাহ। আল্লাহ প্রা‌প্তির কত সুদর্শন চিত্র। দেখে ভাল লাগল। বলা হয়, নামায মো‌মি‌নের জন‌্য মেরাজ অর্থ‌্যাৎ নামা‌যের একাগ্রতায় মো‌মিনের সা‌থে স্বয়ং আল্লাহর সা‌থে স্বাক্ষাৎ বা দেখা হয়। অথচ নামায আদায় নিয়ে আমা‌দের কত অযুহাত ,কত সমস্যা। 

কুরআ‌নে আল্লাহ ৩ ওয়া‌ক্তের সালা‌তের কথা ব‌লে‌ছেন , আবার রাসূল ৫ ওয়াক্ত সাল‌াত আদায় ক‌রে‌ছেন। খোলাফায়ে রাশেদিনের অন্যতম খলিফা ও রাসূলের জামাতা মওলা আলী ব‌লে‌ছেন, আমি এক‌টি সেজদাও আল্লাহ‌কে দেখা ছাড়া দেই‌নি অথচ মেরাজে আল্লাহর সা‌থে সাক্ষাৎ হ‌য়ে‌ছিল রাসু‌লের। আবার রাসুলের সাহাবা হয়েও অনেকে রাসুলের ইমামতিতে নামায আদায় করেও রাসূলের সাথে বিরোধীতা করেছেন, শত্রুতা করেছেন ইসলামের।

আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য ও সত্যিকারের মোমিন হয়ে ওঠার জন্য শুধু নামায আদায় করলেই হবেনা সাথে রাসূলের প্রতি সম্মান ও শ্রদ্ধা থাকাটা সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন। যদি সেজদা দিয়েই আল্লাহকে খুশি করানো যেত তাহলে শয়তান বা ইবলিশ আল্লাহর লানতের স্বীকার হয়ে অভিসপ্ত হতনা।

তাহ‌লে এই নামায বা সালাতের মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের রহস্য কি ? কিভা‌বে সালাত বা নামায আদায় কর‌লে আমরা প্রকৃতভা‌বে আল্লাহ‌কে পাব ?

- জা‌হিদ আহ‌মেদ ও তার স্মৃ‌তি প‌রিষদ।




বৃহস্পতিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২২

ইসলামিক /মুসলিম দেশে যত সব ভাস্কর্য / মুর্তি

 ইসলাম‌িক  বা মুসলিম দেশে যত সব ভাস্কর্য / মুর্তি 

---------------------------------------------------------------

পা‌কিস্তান , সৌ‌দি আর‌ব ও ইন্দো‌নে‌শিয়ার মত মুস‌লিম সংখ্যাগ‌রিষ্ঠ দে‌শে যারা ভ্রম‌ন/ব্যবসা‌য়িক/চাকু‌রির/কোন প্র‌য়োজ‌নে গি‌য়েছেন তারা দে‌খে থাক‌বেন , সেসব দে‌শেও বি‌ভিন্ন স্থা‌নে মুস‌লিম ম‌নি‌ষি/‌যোদ্ধা/‌বি‌শিষ্ট ব্য‌ক্তি‌দের সহ বি‌ভিন্ন বিখ্যাত ব্য‌ক্তি‌দের ভাষ্কর্য র‌য়ে‌ছে। মুস‌লিম দেশ হয়েও তা‌দের দে‌শে এসকল ভাষ্কর্য স্থান পে‌য়ে‌ছে। 

ইসলা‌মে মু‌র্তি পূজা হল আল্লাহর সা‌থে শিরক করার সা‌থে সমতুল্য ও শিরক। তবুও কেন সেসব ইসলা‌মিক দে‌শের সরকার এস‌বের সম্ম‌তি দি‌য়ে থা‌কেন বা দি‌য়ে‌ছেন ? আমরা ই বা কেন তা‌দের‌কে অনুসরন কর‌তে যাব ? ম‌নের ভেতর যে কুসংস্কার, শ্রে‌ণি‌বৈষম্যের আর অহংকা‌রের মু‌র্তি বা ভাষ্কর্য আমরা তৈরী ক‌রে‌ছি তা‌কে কিভা‌বে আমরা ভাঙ্গব ?

মূলত , ভাষ্কর্য নির্ম াণ শিল্প সংস্কৃতির অংশ সুদুড় প্রাচীনকাল থেকেই চলে এসেছে তবে ইসলামিক দেশগুলোতে বি‌ভিন্ন স্থা‌নে মুস‌লিম ম‌নি‌ষি/‌যোদ্ধা/‌বি‌শিষ্ট ব্য‌ক্তি‌দের সহ বি‌ভিন্ন বিখ্যাত ব্য‌ক্তি‌দের ভাষ্কর্য নির্মানের পেছনে কারণ হল আল্লাহর সাথে শিরক হয় এমন বিষয় ছাড়া যে কোন বিষয়ে ভাষ্কর্য নির্ম াণ করা যেতেই পারে তাছাড়া সেসব ইসলামিক দেশগুলোর সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ( আমাদের দেশের ইসলামিক ফাউন্ডেশন এর মত প্রতিষ্ঠান রয়েছে ) এসব  ভাষ্কর্য নির্ম াণ এর বিষয়ে সুস্পষ্ট কারণ উল্লেখ করে মতামত প্রকাশ করেছে।

(*) সবার জানার জন্য কিছু ছ‌বি ইন্টার‌নেট থে‌কে সংগ্রহ ক‌রে শেয়ার করলাম। কাউ‌কে ছোট বা হেয় বা ভুল প্রমা‌নিত করার অ‌ভিপ্রা‌য়ে নয় বরং আমার ব্য‌ক্তিগত ঞ্জা‌নের প‌রি‌ধি বা জানার ইচ্ছা থে‌কে নয়।

- জা‌হিদ আহ‌মেদ ও তার স্মৃ‌তি প‌রিষদ।








বুধবার, ২৭ জুলাই, ২০২২

সরকারি প্রশাসনে বা জনপ্রশাসনে প্রচলিত officer on special duty (O.S.D) বিশেষ কর্মে নিযুক্ত অফিসার - এর বিস্তারিত আলোচনা


 

সরকারি প্রশাসনে বা জনপ্রশাসনে প্রচলিত  officer on special duty (O.S.D) বিশেষ কর্মে নিযুক্ত অফিসার - এর বিস্তারিত আলোচনা

 

O.S.D পৃথিবীব্যপি বেশকিছু বিষয়ে বা বিভাগে কিছু জনপ্রিয় ব্যবহার যা নিম্নে তুলে ধরা হল :

 

Term

Full Form

Category

OSD

Officer on Special Duty

Titles

OSD

Osgood–Schlatter Disease

Diseases & Conditions

OSD

Ostersund

Airport Code

OSD

Open Source Definition

Software & Applications

OSD

On-Screen Display

Electronic Device

OSD

Outsourced Software Development

Business Terms

OSD

Oil Spill Dispersants

Chemistry

OSD

Office of the Secretary of Defense

Departments & Agencies

OSD

Åre Östersund Airport

Airport Codes

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

O.S.D র এশিয় ইতিহাস ও ব্যবহার :

 

# In homepage of the World Bank, they are defined OSD Means Office of Suspension and Debarment (OSD).

​​​​​​​​​​​​​​OSD, led by the World Bank's Chief Suspension and Debarment Officer (SDO), provides the first level of adjudication in the World Bank's suspension and debarment, or "sanctions," system.

# The term ‘Officer on Special Duty’ (OSD) is supposed to refer to a highly efficient and respectable official who is appointed for very important and exclusive tasks. While beginning the practice during the British colonial rule in India the matter was explained to the Central Legislative Assembly by a government spokesman in 1931. According to that explanation, there are two principal criteria in appointing an OSD in the civil service. The first one is when an officer through his appointment as OSD brings far greater economic benefits for the government than that of the amount spent behind him. And the second one is when there is an obligation on the government to take a certain action for the benefits of the larger good. Besides these two criteria, the position of OSD sometimes is offered to a person in his/her training period for a future posting at a higher level. During the British era OSD symbolized a status of honor. But now in Bangladesh meaning of the term has undergone a metamorphosis. With a government circular, issued in October 1991, the provision of keeping a government official OSD for maximum 150 days was initiated and the practice of OSD in the government service took a complete new turn. Some ‘new criteria’ have been put in practice to appoint an officer on special duty. Amongst others ‘spoils system’ is the most common reason for OSD. Nowadays the administration keeps hundreds of officials ‘on special duty’ for years with no duty at all. So, the practice of keeping government officers OSD does not bring any positive outcome for the country except misuse of public money. Gradually it has turned into a curse for all.

According to the Ministry of Public Administration, OSD officials receive their salary, allowances, cars and all the facilities associated with their post. State minister for the Ministry of Public Administration Farhad Hossain informed the parliament recently that at present some 290 government officials are serving as officers on special duty. But a national daily published a special report on this issue on January 9, 2020 which revealed that the actual number of OSD officials is 592 and government has been spending Tk 4.79 crore each month for these officials! A report submitted to the High Court by the Ministry of Public Administration on May 13, 2019, said that 3,605 officers have been made OSD in the past nine years. This has caused misappropriation of a huge sum of money from the public exchequer. This is surely absurd and a curse for the whole nation. We often see different government offices struggle due to inadequate manpower which is a big barrier for them to function properly. Currently a total of 313,848 posts are vacant in different government offices under different ministries. Lack of yearly budget is one of the major reasons that make it difficult to recruit new manpower for these offices. But if the government would recruit necessary staff, it could surely increase the quality of service in those offices. The public offices are going through such a situation at a time when the government is spending a significant amount of money every month unnecessarily behind the officers on special duty.

 

O.S.D র দেশিয় প্রয়োগ ও নির্দেশনা :

# টিভি কিংবা পত্রিকার হেডলাইনে প্রায়ই আসে সরকারি কর্মকর্তা ওএসডি হওয়ার খবর। বিষয়টিকে কেউ দেখেন ইতিবাচকভাবে কেউবা নেতিবাচকভাবে। ওএসডি শব্দটি শুনেই কারো কারো মাথায় ভেসে ওঠে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার নামে গুরুতর অভিযোগ কিংবা দুর্নীতির কারণে শাস্তি পাওয়ার ভয়াবহ চিত্র। কিন্তু বিষয়টি আসলেই পুরোপুরি এমন নয়। বিভিন্ন ইতিবাচক কারণেও একজন কর্মকর্তা ওএসডি হতে পারেন। স্পষ্ট ধারণা না থাকার কারণে এ ব্যাপারে অনেকেই পড়েন বিভ্রান্তিতে।

ওএসডি হচ্ছে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (Officer on Special Duty) সংক্ষিপ্ত রূপ। সকল দেশের সিভিল সার্ভিসের চাকরিতে ওএসডি একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। তবে দক্ষিণ এশিয়ায় (বিশেষত বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান) এটি দ্বারা দায়িত্বহীন কর্মকর্তাকে বুঝায়। সাধারণত কোনো পদায়নের জন্য অপেক্ষমান, অপরাধের দায়ে বহিষ্কৃত বা দায়িত্ব থেকে অব্যাহতিপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে বাংলাদেশে ওএসডি করা হয়।

অন্যান্য দেশের সিভিল সার্ভিসে কিছু কর্মকর্তাকে বিশেষ দায়িত্ব দেওয়া হয়, যারা অন্যদের চেয়ে বেশি দক্ষ ও যোগ্য হিসেবে পরিচিত। দেশের প্রয়োজনে তাদের উপর বিশেষ সেই দায়িত্বটি ন্যস্ত করা হয়। আবার দায়িত্ব শেষে স্বপদে ফিরিয়ে নেওয়া হয়। এসব ওএসডি কর্মকর্তাকে বিশেষভাবে মূল্যায়ন করা হয় এবং সবার সেরা অফিসার হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়।

কিন্তু বাংলাদেশে ওএসডি শব্দটি দিনদিন নেতিবাচক হয়ে পড়েছে। এখানে এই স্পেশাল দায়িত্ব কখনোই কোনো ভালো কাজের জন্য দেওয়া হয় না, বরং এটাকে একরকম শাস্তিমূলক ব্যবস্থা বলা চলে। বাংলাদেশে কোনো কর্মকর্তাকে ওএসডি করা মানেই হচ্ছে, তার বিরুদ্ধে গুরুতর কোনো অভিযোগ এসেছে, যার ফলশ্রুতিতে তাকে স্পেশাল দায়িত্বে (মূলত দায়িত্বহীন) নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। সাধারণত কোনো কর্মকর্তা অফিসের নিয়মনীতি লঙ্ঘন করলে, দুর্নীতি বা অন্য কোনো অপরাধ করলে শাস্তি দেওয়ার জন্য এই দায়িত্ব দেওয়া হয়। এছাড়া কর্মকর্তার বিপরীতে পদসংকট, পদোন্নতি, প্রশিক্ষণ এবং বিশেষ কাজে নিয়োজিতসহ সরকারের বিভিন্ন প্রয়োজনে যে কাউকে ওএসডি করা হতে পারে।

১৯৮৬ সালের নভেম্বর মাসে জারি করা নীতিমালা অনুযায়ী পাঁচটি কারণে সরকারি কর্মকর্তাকে ওএসডি করা যায়:

১। দুর্নীতি, শৃঙ্খলাজনিত, অসদাচরণ ও অযোগ্যতার জন্য প্রত্যাহার করা কর্মকর্তাকে ওএসডি করা যায়। তবে সর্বোচ্চ ১৫০ দিন ওএসডি রাখা যাবে।

২। দুই মাসের অধিক ছুটি ভোগকারী বা প্রশিক্ষণের উদ্দেশ্যে ওএসডি করা যায়।

৩। পুরোনো পদ বা বৈদেশিক চাকরি থেকে অব্যাহতি বা বৈদেশিক প্রশিক্ষণ থেকে প্রত্যাগত এবং নতুন পদে যোগদানের জন্য অপেক্ষমাণ রয়েছেন এমন কর্মকর্তাকে ওএসডি করা যায়।

৪। বৈদেশিক চাকরি বা প্রশিক্ষণের জন্য বিদেশি ভাষা শিক্ষার উদ্দেশ্যে অপেক্ষমাণ রয়েছেন এমন কর্মকর্তাকে ওএসডি করা যায়। এ ক্ষেত্রে অনূর্ধ্ব তিন মাস পর্যন্ত ওএসডি রাখা যাবে।

৫। প্রশাসনিক বা অনিবার্য কারণে কোনো কর্মকর্তাকে ওএসডি করা যায়।

একটি নির্দিষ্ট সময় পরে এই ওএসডি থেকে মুক্তি দিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে আগের স্থানে কিংবা অন্য কোনো পদে ফেরত নিয়ে আসা হয়।

বিশেষ দায়িত্বপ্রাপ্ত এসব কর্মকর্তারা বেতন, ভাতা, গাড়িসহ সব ধরণের সুযোগ-সুবিধা পান। পান না শুধু কোনো দায়িত্ব। সাধারণত একজন ওএসডিকে অফিসে উপস্থিত হয়ে স্বাক্ষর করা ছাড়া আর কোনো দায়িত্ব পালন করতে হয় না। সচিবালয়ের জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে প্রতিদিন হাজিরা দিয়ে নির্দিষ্ট জায়গায় বসে দাপ্তরিক সময় পার করতে হয় তাদের।

যদিও একজন ওএসডিকে তার বিল উঠানোর কাগজপত্র জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে দেখাতে হয়, তবুও সেই কর্মকর্তাদেরকে কোনো চেয়ার-টেবিল পর্যন্ত বরাদ্দ দেওয়া হয় না। তারা সাধারণত মন্ত্রণালয়ের লাইব্রেরিতে বসে থাকেন। লাইব্রেরিই মূলত তাদের অফিস কক্ষ। এখানে বসে তারা বই পড়েন কিংবা সমমনা অন্য বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের সাথে গল্পগুজব করে সময় পার করেন। কেউ যদি কোনো ওএসডি কর্মকর্তার সাথে দেখা করতে আসেন, তাহলে তাকে সচিবালয়ের লাইব্রেরিতে কিংবা ক্যান্টিনে আসতে হবে।

বিষয়টি চাকরির একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া হলেও ওএসডি হওয়া কর্মকর্তারা এক ধরণের অস্বস্তি নিয়েই বেঁচে থাকেন। সমাজের মানুষগুলোর চোখে তারা হয়ে যান মর্যাদাহীন। কারো কাছেই নিজের নির্দিষ্ট পরিচয় দিতে পারেন না। কারণ, পদ থাকার পরেও এসময় কোনো কাজ করতে পারেন না তারা। নিজের অধীনে কোনো দায়িত্ব না থাকায় বিষয়টিকে অনেকটাই শাস্তি হিসেবে মনে করেন কর্মকর্তারা। অন্যদিকে ওএসডি কর্মকর্তাদের বিপরীতে বিপুল পরিমাণ অর্থ খরচ করে দেশবাসীও বঞ্চিত হয় তাদের প্রাপ্য সেবা থেকে।

# তথ্যসুত্র : ইন্টারনেট ও বিভিন্ন সৎবাদমাধ্যম

-    জাহিদ আহমেদ তার স্মৃতি পরিষদ

 

সোমবার, ১৩ জুন, ২০২২

বিলুপ্তি ও দুর্যোগ : প্রাকৃতিক পরিবর্তন ও ষষ্ঠ বিলুপ্তির পথে পৃথিবী

 

বিলুপ্তি ও দুর্যোগ : প্রাকৃতিক পরিবর্তন ও ষষ্ঠ বিলুপ্তির পথে পৃথিবী

০৫ ই জুন বিশ্ব প‌রি‌বেশ দিবস পৃ‌থিবীজু‌ড়ে পা‌লিত হ‌য়ে থা‌কে । কিন্তু প‌রিবেশ সুন্দর ও বসবাস‌যোগ্য রাখা আমা‌দের যেমন দা‌য়িত্ব তেম‌নি প‌রি‌বে‌শের ভারসাম্য স‌ঠিক রাখাও আমা‌দের একান্ত দা‌য়িত্ব । পৃ‌থিবীর প‌রি‌বেশ দিন দিন আমা‌দের কার‌ণে হুম‌কির স্বীকার হ‌চ্ছে। মানব ইতিহা‌সে প‌রি‌বেশ বিপর্য‌য়ের ঘটনা অ‌নেকবার ঘ‌টে‌ছে , ঘ‌টে‌ছে বিলু‌প্তির মত ঘটনা । তার ম‌ধ্যে প্রাকৃ‌তিকভা‌বে স্রস্টার ইচ্ছায় যেমন বিলু‌প্তি ঘ‌টে‌ছে তেম‌নি মানুষ দ্বারাও সৃ‌স্টি হ‌য়ে‌ছে ‌বিলু‌প্তি । নি‌চে বিশদ বর্ণণা করা হল ।

--------------------------------------------------------

বিলুপ্তি' শব্দটার অর্থ নিশ্চয়ই আমাদের জানা আছে কোনো প্রাণী পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত হয়ে গেছে বলতে বোঝায়, প্রজাতির শেষ প্রাণীটিও মৃত্যুবরণ করেছে এরকম বিলুপ্তি যখন ব্যাপক আকারে ঘটে, তখন তাকে গণবিলুপ্তি বলা হয় পৃথিবীর অধিকাংশ প্রাণীর বিলুপ্তি হয়েছে এই বড় আকারের বিলুপ্তির সময়গুলোতেই সাধারণত, প্রতি লক্ষ বছরে কেবল হাতেগোনা কিছু প্রাণীর বিলুপ্তি ঘটে কিন্তু একেকটি গণবিলুপ্তির সময়েই পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত হয়ে যায় হাজারো প্রাণী পৃথিবীতে আজোবধি যত সংখ্যক প্রাণীর পদচারণা হয়েছে, দুঃখজনকভাবে তার ৯৯ শতাংশই বিলুপ্ত হয়ে গেছে!

মানুষের দ্বারা লিখিত ইতিহাস মাত্র কয়েক হাজার বছরের হলেও পৃথিবীর ইতিহাস ৪৬০ কোটি বছরের। এই দীর্ঘ সময়ের পরিক্রমায় আমাদের জানা একমাত্র বসবাসযোগ্য এই গ্রহে বিচরণ করেছে লক্ষ লক্ষ প্রজাতির প্রাণী। কিন্তু কালের মহাস্রোতে হারিয়ে গেছে তাদের ৯৯ শতাংশই। এই মহাস্রোতের কিছু সময় ছিল, যখন সময় চোরাবালিতে রূপ নেয় আর পৃথিবীর প্রাণীকূল অসহায়ের মতো সেই চোরাবালিতে চিরতরে হারিয়ে যায়। নির্দিষ্ট করে বললে, ইতিহাসে ঠিক পাঁচবার সময়ের মহাস্রোত এরূপ চোরাস্রোতে পরিণত হয়েছিল, যে স্রোতগুলো পৃথিবীর প্রাণীবৈচিত্র্য একপ্রকার ধ্বংসই করে দিয়েছে। আর গণবিলুপ্তির এরূপ চোরাস্রোত সৃষ্টির পেছনে মূল নিয়ামকের ভূমিকা পালন করেছে প্রকৃতিই। কখনো বৃহৎ আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত, বড় আকারের ভৌগোলিক পরিবর্তন, জলবায়ু পরিবর্তন কিংবা বড় বড় উল্কা পতনই ঘটিয়েছিল এসব গণবিলুপ্তি

তবে, গণবিলুপ্তি একদিকে বৈচিত্র্য ধ্বংস করলেও আরেকদিকে বৈচিত্র্য তৈরির কাজও করে। ইতিহাসে প্রতিটি গণবিলুপ্তির পরই প্রকৃতিতে খুব দ্রুতস্পেসিয়েশনবা প্রজাত্যায়ন এবং বিবর্তন ঘটতে দেখা গেছে। সাধারণত, প্রতিটি গণবিলুপ্তির পর প্রকৃতির বিভিন্ন বাস্তুসংস্থানে অসংখ্য শূন্যস্থান তৈরি হয়। বিপর্যয়ে বেঁচে যাওয়া অল্প সংখ্যক প্রাণীগুলো তখন সেই শূন্যস্থান নিতে চেষ্টা করে। ফলে একই প্রজাতির প্রাণী যেখানে পূর্বের অবস্থায় বাধ্য হয়ে সীমিত স্থানে, সীমিত খাদ্যের উপর ভিত্তি করে বেঁচে ছিল, তারাই একটি গণবিলুপ্তির পর নিজেদের মেলে ধরার সুযোগ পেয়ে অন্যদের রেখে যাওয়া স্থান এবং খাদ্যশৃঙ্খল কব্জা করে। খাদ্যের জন্য, বাসস্থানের জন্য, শিকারের জন্য, সবকিছুর জন্যই এসময় প্রতিযোগিতা থাকে সর্বনিম্ন। ফলে অবশিষ্টরা স্বাধীনভাবে বেঁচে থাকতে সক্ষম হয় এবং বাস্তুসংস্থানের বিভিন্ন শূন্যস্থান পূরণ করতে গিয়ে নিজেদের স্বভাববিরুদ্ধ কাজকর্মে লিপ্ত হয়। সেসব কাজ করতে গিয়ে তাদের আচার আচরণ আর দৈহিক গঠনে ধীরে ধীরে পরিবর্তন আসে, ঘটে চলে বিবর্তন, সৃষ্টি হয় নতুন নতুন প্রজাতির। বিবর্তনের ধারা অত্যন্ত মন্থর হলেও, প্রতিটি গণবিলুপ্তি পরবর্তী সময়ে বিবর্তন ঘটেছে বেশ দ্রুত

 গণবিলুপ্তিতে পৃথিবী থেকে হারিয়ে গিয়েছিল ডাইনোসরের সকল প্রজাতি

বিজ্ঞানীরা সাম্প্রতিককালে বারংবার মনে করিয়ে দিচ্ছেন যে পৃথিবীতে ঘটে যাওয়া আগের ৫টি গণবিলুপ্তির মতো আরো একটি গণবিলুপ্তির প্রক্রিয়া চলছে। এখনই সতর্ক না হলে ঘটতে পারে ষষ্ঠ গণবিলুপ্তির ঘটনাটিও। তবে আজকের আলোচনায় ষষ্ঠ গণবিলুপ্তির কথা থাকছে না। আজকে বরং চলুন সংক্ষেপে পরিচিত হই ইতিহাসের মর্মান্তিক পাঁচটি গণবিলুপ্তির সাথে

. ওর্ডোভিসিয়ান গণবিলুপ্তি

পৃথিবীর ইতিহাসে প্রথম গণবিলুপ্তির ঘটনাটি ঘটে ৪৪০ মিলিয়ন বছর পূর্বে পালেওজয়িক বা পুরাজীবীয় যুগে। এই গণবিলুপ্তিতে সে সময় পৃথিবীতে অস্তিত্ববান প্রাণীগুলোর ৮৫ শতাংশই ধ্বংস হয়ে যায়। সে সময়ও পৃথিবীতে জীবজগৎ পৃথিবীতে পুরোপুরি বিকাশ লাভ করতে পারেনি। তথাপি, প্রথম প্রাণের সঞ্চার ঘটেছিল ওর্ডোভিসিয়ান যুগের ৩০০ কোটি বছরেরও অধিক সময় আগে। পালেওজয়িক যুগের ওর্ডোভিসিয়ান কালে প্রবেশ করতে করতে ততদিনে সামুদ্রিক প্রাণীজগত প্রায় পুরোপুরি বিকশিত হবার পথে ছিল। এমনকি ভূমিস্থ প্রাণিজগতও বিকাশ লাভ করতে শুরু করেছিল পুরোদমে। কিন্তু তখনই এক ভয়াবহকন্টিনেন্টাল ড্রিফটবা মহীসঞ্চরণে সব এলোমেলো হয়ে যায়। জলবায়ুতে রাতারাতি আসে চূড়ান্ত পরিবর্তন, যা তখনো বিকাশ লাভ করতে থাকা প্রাণীকূলের সহনশীলতার মাত্রা ছাড়িয়ে যায়

 ওর্ডোভিসিয়ান গণবিলুপ্তির যুগের স্থলভাগে প্রাণীদের বসবাস শুরু হয়

ওর্ডোভিসিয়ান গণবিলুপ্তি দু'টি ধাপে ঘটে। প্রথম ধাপে পৃথিবীতে শুরু হয় এক দীর্ঘ বরফের যুগ, যখন সমগ্র পৃথিবীর আবহাওয়া অত্যধিক শীতল হয়ে যায়, জলভাগের অধিকাংশ বরফ হয়ে যাওয়া পানির স্তর নিচে নেমে যায়। এসময় স্থলভাগের সকল প্রাণীর মৃত্যু হয়, মরে যায় অসংখ্য সামুদ্রিক প্রজাতিও। কিন্তু বরফের যুগের সমাপ্তিও কোনো অংশে স্বস্তিদায়ক ছিল না জলভাগের অবশিষ্ট বেঁচে থাকা প্রাণীদের জন্য। বরফ যুগের সমাপ্তি এতো দ্রুত ঘটেছিল যে দীর্ঘকাল তীব্র ঠাণ্ডায় বেঁচে থাকা প্রাণীগুলো অভিযোজনের সময় পর্যন্ত পায়নি। এমনকি, দ্রুত বরফ গলে সমুদ্রের পানির স্তর ততোধিক দ্রুততার সাথে বৃদ্ধি পেলে পানিতে অক্সিজেনের পরিমাণও স্বাভাবিক মাত্রায় রক্ষিত হয়নি ধাপে সমুদ্রের প্রাণীকূলও অধিকাংশই বিলুপ্ত হয়। বেঁচে থাকতে সক্ষম হয় কেবল কিছু সামুদ্রিক অটোট্রফ

. ডেভোনিয়ান গণবিলুপ্তি

ওর্ডোভিসিয়ান গণবিলুপ্তিই পালেওজয়িক যুগের শেষ জীব বিপর্যয় ছিল না। আরো দু'টি বিপর্যয় তখনো বাকি। এর একটি ঘটেছিল যুগের ডেভোনিয়ান পর্যায়ে। প্রথম গণবিলুপ্তির পর এই দ্বিতীয় গণবিলুপ্তিটি ঘটেছিল অপেক্ষাকৃত দ্রুততর সময়ের ব্যবধানে। আনুমানিক ৩৭৫ মিলিয়ন বছর আগে ঘটেছিল ডেভোনিয়ান গণবিলুপ্তি, যা প্রথম মহাবিলুপ্তি থেকে মাত্র ৬৫ মিলিয়ন বছর পরের সময়। ওর্ডোভিসিয়ান গণবিলুপ্তির ধ্বংসাবশেষ থেকে প্রাণীকূল তখনো বিকাশলাভের প্রাথমিক পর্যায়েই রয়ে গিয়েছিল। এরই মাঝে ডেভোনিয়ান গণবিলুপ্তি ঘটলে পৃথিবী থেকে নিশ্চিহ্ন হয়ে যায় ৮০ ভাগ জলজ স্থলজ প্রাণী

ডেভোনিয়ান গণবিলুপ্তির সুনির্দিষ্ট কারণ বিজ্ঞানীরা নির্ধারণ করতে না পারলেও এই মহাবিলুপ্তিটিও দুই ধাপে সম্পন্ন হয়। প্রথম ধাপে হঠাৎ (সম্ভবত মহীসঞ্চরণের কারণে) সমুদ্রের পরিবেশ সামুদ্রিক প্রাণীদের জন্য বিরূপ হয়ে ওঠে, বিশেষ করে সামুদ্রিক উদ্ভিদের ক্ষেত্রে। একটি সংক্ষিপ্ত পরিসরের মাঝেই তাই সামুদ্রিক উদ্ভিদের একটা বড় অংশ স্থলভাগে অভিযোজিত হয়ে ওঠে। তখন সমুদ্রে অক্সিজেন উৎপাদনকারীর পরিমাণ কমে গেলে অক্সিজেনের অভাবে মারা যায় অধিকাংশ সামুদ্রিক প্রাণী। এদিকে সংক্ষিপ্ত সময়ের মাঝে স্থলভাগে উদ্ভিদের সংখ্যা প্রাণীর সংখ্যার চেয়ে অতি দ্রুত বেড়ে গেলে হঠাৎ করেই পৃথিবীর আবহাওয়ায় দ্রুত হ্রাস পায় কার্বন-ডাইঅক্সাইডের পরিমাণ। আর গ্রীনহাউজ গ্যাসের হ্রাস পাওয়া যতটা না দ্রুত ঘটে, তার চেয়ে দ্রুত কমে যায় পৃথিবীর তাপমাত্রা, আবহাওয়া হয়ে ওঠে চরমভাবাপন্ন, মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে অধিকাংশ স্থলজ প্রাণী। ডেভোনিয়ান পর্যায়ের দ্বিতীয় ধাপের গণবিলুপ্তির কারণ আজও রহস্যময়। খুব সম্ভবত কোনো বড় ধরনের আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত কিংবা উল্কাপাতের জন্যই এই ধ্বংসযজ্ঞ ঘটেছিল

. পারমিয়ান গণবিলুপ্তি

 আগ্নেয়গিরি এবং উল্কাপাত, উভয় কারণেই পারমিয়ান মহাবিপর্যয় ঘটে

পালেয়জয়িক যুগটাই সম্ভবত পৃথিবীর ইতিহাসে প্রাণীজগতের জন্য সবচেয়ে অপয়া যুগ। আনুমানিক ২৫০ মিলিয়ন বছর আগে, যুগের শেষ অধ্যায়ে পারমিয়ান পর্যায়ে এসে ঘটে আরো একটি গণবিলুপ্তি। আর পারমিয়ান গণবিলুপ্তি নামে পরিচিত এই বিপর্যয়টিই পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে বড় মহাবিলুপ্তি। পারমিয়ান গণবিলুপ্তিতে পৃথিবী থেকে নিশ্চিহ্ন হয় সে সময়ে অস্তিত্ববান ৯৬ শতাংশ প্রাণীই! কি জলজ কি স্থলজ, সকল প্রাণীই যেন পাল্লা দিয়ে পৃথিবী থেকে পাততাড়ি গুটিয়ে অনন্তের পথে পা বাড়িয়েছিল এই মহাবিলুপ্তির পর্যায়ে। এর কারণটিও বিজ্ঞানীরা সুনির্দিষ্ট করতে পারেননি। খুব সম্ভবত আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত এবং বড় উল্কাপতনই এতো বৃহৎ সংখ্যক প্রাণীর মৃত্যুর কারণ ছিল। তবে অধিকাংশ গবেষকের মতে, এই মহাবিপর্যয়টি ঘটেছিল অগ্ন্যুৎপাত আর উল্কাপতন- উভয়ের কারণেই। বাতাসে মিথেনের পরিমাণ বেড়ে গিয়েছিল প্রচুর পরিমাণে, পৃথিবীর আবহাওয়া হয়ে উঠেছিল বসবাসের অযোগ্য, তাপমাত্রা বেড়ে গিয়েছিল যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি। আর এসবের কারণে অল্প কিছু প্রাণী বাদে সকলের অন্তর্ধানের মাধ্যমে বিদায় নেয় পালেওজয়িক যুগ, আগমন ঘটে মেসোজয়িক যুগের

. ট্রায়াসিক-জুরাসিক গণবিলুপ্তি

 ট্রায়াসিক গণবিলুপ্তির সময় পৃথিবী জুড়ে ব্যাপক পরিমাণে আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের ঘটনা ঘটে

আনুমানিক ২০০ মিলিয়ন বছর পূর্বে মেসোজয়িক যুগের ট্রায়াসিক পর্যায় অন্তিম মুহূর্তে পৌঁছালে ট্রায়াসিক গণবিলুপ্তির শুরু হয়। গণবিলুপ্তি ইতিহাসের অন্যান্য গণবিলুপ্তির তুলনায় দীর্ঘস্থায়ী এবং কম ক্ষয়ক্ষতি সাধন করেছিল। মূলত, ট্রায়াসিক গণবিলুপ্তি বলতে একাধিক ছোট ছোট গণবিলুপ্তিকে একত্রে বোঝানো হয়। ট্রায়াসিক পর্যায়ের শেষ ১৮ মিলিয়ন বছর জুড়েই এসব ছোট ছোট গণবিলুপ্তির ঘটনা ঘটে এবং সময় পৃথিবী থেকে হারিয়ে যায় প্রাণীজগতের অস্তিত্ববান ৫০ ভাগ প্রজাতি। আর এই গণবিলুপ্তির একক কারণ হলো প্রচণ্ড রকমের আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত। ট্রায়াসিক পর্যায়ের শেষভাগে এসে পৃথিবীতে এত বেশি পরিমাণ অগ্ন্যুৎপাতের ঘটনা ঘটে যে স্থলভাগের একটা বড় অংশ ব্যাসল্ট বা আগ্নেয়শিলার বন্যায় প্লাবিত হয়। তাতেই ধ্বংস হয়ে যায় অনেক স্থলজ প্রাণী। উপরন্তু, ব্যাপক পরিমাণ অগ্ন্যুৎপাতের কারণে বাতাসে বেড়ে যায় মিথেনের পরিমাণ, বড় আকারের পরিবর্তন ঘটে জলবায়ুতে, পানিতে পিএইচ লেভেল স্বাভাবিকের চেয়ে কোথাও বেড়ে যায় তো কোথাও কমে যায়, সবমিলিয়ে অবস্থা এতটা প্রতিকূল হয় যে বিরাট সংখ্যক প্রাণীর অস্তিত্ব লোপ পায়

. ক্রিটেসিয়াস-টারশিয়ারি গণবিলুপ্তি

 এই গণবিলুপ্তির কালেই পৃথিবী থেকে নিশ্চিহ্ন হয় ডাইনোসর প্রজাতি;

পৃথিবীর ইতিহাসে শেষ গণবিলুপ্তির ঘটনাটি ঘটেছিল ৬৫ মিলিয়ন বছর পূর্বে। অন্যান্য গণবিলুপ্তির চেয়ে এই গণবিলুপ্তিটিই সবচেয়ে দীর্ঘ সময়ের বিরতিতে ঘটে। সবচেয়ে পরিচিত এবং বিজ্ঞানীদের নিকট সর্বাধিক প্রমাণ সম্বলিত মহাবিলুপ্তির ঘটনাও এটিই। এই মহাবিলুপ্তিই দু'টি দীর্ঘ যুগের মধ্যে বিভক্তি রেখা টেনে দেয়। মেসোজয়িক যুগের শেষ অধ্যায় তথা ক্রিটেসিয়াস পর্যায় এবং সেনোজয়িক যুগের প্রথম অধ্যায় তথা টারশিয়ারি পর্যায়ের মাঝে এই গণবিলুপ্তির ঘটনাটি ঘটে বলে একে ক্রিটেসিয়াস-টারশিয়ারি গণবিলুপ্তি বলা হয়। এই গণবিলুপ্তিতে পৃথিবী থেকে চিরবিদায় নেয় তখনকার প্রাণীজগতের ৭৫ ভাগ প্রজাতি, যার মধ্যে অতি পরিচিত নাম 'ডাইনোসর' আছে। এই গণবিলুপ্তির কারণও অন্যগুলোর চেয়ে স্পষ্ট এবং সুনির্দিষ্ট। এক প্রচণ্ড উল্কাপাত কিংবা গ্রহাণুর পতনেই সূচনা হয় মহাবিলুপ্তির। পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের ঘর্ষণে জ্বলন্ত অগ্নিকুণ্ডে পরিণত হওয়া বিশাল বিশাল উল্কা কিংবা গ্রহাণুগুলো একদিকে যেমন জলজ প্রাণীদের হত্যা করেছে, অন্যদিকে স্থলভাগের প্রাণীও হত্যা করেছে। বিস্ফোরণ থেকে নিরাপদ দূরত্বে থাকা প্রাণীরাও রক্ষা পায়নি। কেননা, প্রচণ্ড সব বিস্ফোরণে প্রাণীকূলের আয়ত্তে থাকা বায়ুমণ্ডল ট্রফোস্ফিয়ার ধূলিকণা আর বিষাক্ত গ্যাসে ভরে যায়। ফলে মৃত্যু হয় অধিকাংশ প্রাণীর

গ্রেট অক্সিজেনেশনের সংকট (. বিলিয়ন বছর আগে)

জীবনের ইতিহাসের একটি প্রধান টার্নিং পয়েন্ট ঘটেছিল আড়াই বিলিয়ন বছর আগে যখন ব্যাকটিরিয়া সালোকসংশ্লেষণের সক্ষমতাটি বিকশিত হয়েছিল - অর্থাৎ কার্বন ডাই অক্সাইডকে বিভক্ত করতে এবং শক্তি ছাড়তে সূর্যের আলো ব্যবহার করা।দুর্ভাগ্যক্রমে, সালোকসংশ্লেষণের প্রধান উপজাত ' অক্সিজেন, যা আজ থেকে . বিলিয়ন বছর পূর্বে পৃথিবীতে প্রদর্শিত অ্যানারোবিক (-অক্সিজেন-শ্বাস-প্রশ্বাস) জীবের পক্ষে বিষাক্ত ছিল। সালোকসংশ্লেষণের বিবর্তনের দু'শো মিলিয়ন বছর পরে, পৃথিবীর বেশিরভাগ অ্যানেরোবিক জীবন (গভীর সমুদ্র-বাসকারী ব্যাকটেরিয়া বাদে) বিলুপ্ত হয়ে যাওয়ার জন্য বায়ুমণ্ডলে পর্যাপ্ত অক্সিজেন তৈরি হয়েছিল

স্নোবল আর্থ (700 মিলিয়ন বছর আগে

একটি প্রমাণিত সত্যের চেয়ে বেশি সমর্থিত হাইপোথিসিসের চেয়ে অনেক বেশি, স্নোবল আর্থ বলেছে যে আমাদের গ্রহের পুরো পৃষ্ঠটি 700০০ থেকে 50৫০ মিলিয়ন বছর আগে যে কোনও জায়গায় দৃo়ভাবে জমাট বেঁধেছিল এবং সর্বাধিক আলোকসংশ্লিষ্ট জীবনকে বিলুপ্ত করেছে। স্নোবল আর্থের জন্য ভূতাত্ত্বিক প্রমাণগুলি শক্তিশালী হলেও এর কারণ তীব্রভাবে বিতর্কিত। সম্ভাব্য প্রার্থীরা আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত থেকে শুরু করে সৌর শিখা থেকে পৃথিবীর কক্ষপথে এক রহস্যময় ওঠানামা অবধি। এটি সত্যই ঘটেছে বলে ধরে নেওয়া, স্নোবল আর্থ তখন হতে পারে যখন আমাদের গ্রহের জীবন সম্পূর্ণরূপে, অপরিশোধনযোগ্য বিলুপ্তির নিকটে এসেছিল

শেষ-এডিয়াচরণ বিলুপ্তি (542 মিলিয়ন বছর আগে)

এডিয়াচরণ সময়কালের সাথে খুব বেশি লোক পরিচিত নয়, এবং সঙ্গত কারণে: এই ভূতাত্ত্বিক সময়ের বিস্তৃতকরণ (6৩৩ মিলিয়ন বছর আগে থেকে ক্যাম্ব্রিয়ান যুগের গোষ্ঠী পর্যন্ত) বৈজ্ঞানিক সম্প্রদায় কর্তৃক 2004 সালে আনুষ্ঠানিকভাবে নামকরণ করা হয়েছিল। এডিয়াচরণ সময়কালে, আমাদের কাছে সহজ, নরম-দেহযুক্ত বহু-কক্ষীয় জীবের জীবাশ্ম প্রমাণ রয়েছে যা পেরেজোজিক যুগের শক্ত শেলযুক্ত প্রাণীগুলির পূর্বাভাস দেয়। যাইহোক, এডিচরণ শেষে ডাল পাত্রে, এই জীবাশ্ম অদৃশ্য হয়ে যায়। নতুন জীবগুলি আবারও কল্পিতভাবে উপস্থিত হওয়ার আগে কয়েক মিলিয়ন বছর ব্যবধান রয়েছে

ক্যামব্রিয়ান-অর্ডোভিশিয়ান বিলুপ্তির ঘটনা (৪৮৮ মিলিয়ন বছর আগে)

আপনি ক্যামব্রিয়ান বিস্ফোরণের সাথে পরিচিত হতে পারেন। প্রায় 500 মিলিয়ন বছর পূর্বে অসংখ্য উদ্ভট জীবের জীবাশ্ম রেকর্ডে এটি উপস্থিতি রয়েছে, তাদের বেশিরভাগ আর্থ্রোপড পরিবারের অন্তর্ভুক্ত। তবে আপনি সম্ভবত ক্যামব্রিয়ান-অর্ডোভিশিয়ান বিলুপ্তির ঘটনার সাথে কমই পরিচিত না, যা ট্রিলোবাইট এবং ব্র্যাচিওপড সহ বিশাল সংখ্যক সামুদ্রিক জীবের অদৃশ্য হয়ে গেছে। জীবনের সম্ভবত শুকনো জমিতে পৌঁছতে না পেরে বিশ্বের সমুদ্রের অক্সিজেন সামগ্রীতে হঠাৎ, অব্যক্ত কমানোর সবচেয়ে সম্ভবত ব্যাখ্যা explanation

অর্ডোভিশিয়ান বিলুপ্তি (৪৪-4-৪৪ মিলিয়ন বছর আগে)

অর্ডোভিশিয়ান বিলুপ্তিতে দুটি পৃথক বিলুপ্তির সমন্বয়ে গঠিত: একটি ' 77 মিলিয়ন বছর আগে এবং অন্যটি ৪৩৩ মিলিয়ন বছর আগে। এই দুটি "ডাল" শেষ হওয়ার পরে, বিশ্বের সামুদ্রিক বৈদ্যুতিন (ব্রাচিওপোডস, বিভেলভ এবং প্রবালগুলি সহ) জনসংখ্যার পরিমাণ হ্রাস পেয়েছিল 60 শতাংশ। অর্ডোভিশিয়ান বিলুপ্তির কারণ এখনও একটি রহস্য। প্রার্থীরা কাছাকাছি সুপারনোভা বিস্ফোরণ (যা পৃথিবীকে মারাত্মক গামা রশ্মির সংস্পর্শে আনত) থেকে শুরু করে সমুদ্রতল থেকে বিষাক্ত ধাতব নির্গমন হতে পারে

দেরীতে ডেভোনিয়ান বিলুপ্তি ( 37 মিলিয়ন বছর আগে)

অর্ডোভিশিয়ান বিলুপ্তির মতো, মরহুম ডিভোনিয়ান বিলুপ্তিতে অনেকগুলি "ডাল" রয়েছে, যা প্রায় 25 মিলিয়ন বছর ধরে প্রসারিত হতে পারে। পলিটি স্থির হয়ে যাওয়ার পরে, পৃথিবীর সমস্ত সামুদ্রিক জেনারার প্রায় অর্ধেক বিলুপ্ত হয়ে যায়, যার মধ্যে অনেক প্রাচীন মাছ ছিল যার জন্য ডেভোনিয়ান সময় বিখ্যাত ছিল। ডিভোনিয়ান বিলুপ্তির কারণ কী তা কেউ নিশ্চিতভাবে নিশ্চিত নয়। সম্ভাবনাগুলির মধ্যে রয়েছে একটি উল্কাপূর্ণ প্রভাব বা মারাত্মক পরিবেশগত পরিবর্তন যা বিশ্বের প্রথম স্থল-বাসকারী গাছপালা দ্বারা নেওয়া হয়েছিল

পার্মিয়ান-ট্রায়াসিক বিলুপ্তির ইভেন্ট (250 মিলিয়ন বছর আগে)

সমস্ত গণ-বিলুপ্তির জননী, পার্মিয়ান-ট্রায়াসিক বিলুপ্তির ঘটনাটি একটি সত্য বৈশ্বিক বিপর্যয় ছিল, সমুদ্র-বাসকারী প্রাণীগুলির একটি অবিশ্বাস্য 95% প্রাণী এবং percent শতাংশ স্থলজন্তুকে নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছিল। তীব্র বিপর্যয়টি হয়েছিল যে ট্রায়াসিক জীবাশ্মের রেকর্ডের প্রথম দিকে বিচার করতে, জীবনটি পুনরুদ্ধার করতে 10 মিলিয়ন বছর সময় নিয়েছিল। যদিও এটি মনে হতে পারে যে এই স্কেলটির কোনও ঘটনা কেবলমাত্র একটি উল্কাপূর্ণ প্রভাবের কারণে ঘটতে পারে, সম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্যে চরম আগ্নেয়গিরির ক্রিয়াকলাপ এবং / অথবা সমুদ্রের তল থেকে হঠাৎ করে বিষাক্ত পরিমাণে মিথেনের প্রকাশের অন্তর্ভুক্ত থাকে

ট্রায়াসিক-জুরাসিক বিলুপ্তির ঘটনা (২০০ মিলিয়ন বছর আগে)

কে / টি বিলুপ্তির ঘটনা ডাইনোসরদের যুগের অবসান ঘটিয়েছিল, তবে এটি ছিল ট্রায়াসিক-জুরাসিক বিলুপ্তির ঘটনা যা তাদের দীর্ঘ রাজত্বকে সম্ভব করেছিল। এই বিলুপ্তির শেষে (যার সঠিক কারণটি নিয়ে এখনও বিতর্ক রয়েছে), বেশিরভাগ বৃহত, স্থল-বাসকারী উভচর পৃথিবী থেকে মুছে ফেলা হয়েছিল, বেশিরভাগ আর্কোসর এবং থেরাপিডিসহ। ডাইনোসরদের পরবর্তী জুরাসিক এবং ক্রিটাসিয়াস সময়কালে এই শূন্য বাস্তুসংস্থানিক কুলুঙ্গিগুলি (এবং সত্যিকারের বিশাল আকারের বিকাশে) বসবাসের জন্য উপায়টি পরিষ্কার করা হয়েছিল

কে / টি বিলুপ্তির ইভেন্ট (65 মিলিয়ন বছর আগে)

সম্ভবত পরিচিত গল্পটি শোনার দরকার নেই: million মিলিয়ন বছর পূর্বে, দুই মাইল প্রশস্ত উল্কাটি ইউকাটান উপদ্বীপে ধাক্কা মেরে বিশ্বব্যাপী ধূলিকণা মেঘ উত্থাপন করেছিল এবং একটি বাস্তুসংস্থানীয় বিপর্যয় বন্ধ করেছিল যে ডাইনোসর, টেরোসরাস এবং সামুদ্রিক সরীসৃপকে বিলুপ্ত করেছিল। এটি যে ধ্বংসাত্মক ঘটনা ঘটেছে তা বাদ দিয়েও কে / টি বিলুপ্তির ঘটনার একটি স্থায়ী উত্তরাধিকার ' এটি বহু বিজ্ঞানীকে ধরে নিয়েছিল যে গণ বিলুপ্তি কেবলমাত্র উল্কা প্রভাব দ্বারা ঘটতে পারে। আপনি যদি পর্যন্ত পড়ে থাকেন তবে আপনি জানেন যে সহজভাবে এটি সত্য নয়

কোয়ার্টারারি বিলুপ্তির ইভেন্ট (50,000-10,000 বছর আগে)

মানুষের দ্বারা প্রাপ্ত একমাত্র গণ বিলুপ্তির কারণ (কমপক্ষে আংশিকভাবে), কোয়ার্টেনারি বিলুপ্তির ঘটনাটি পশম ম্যামথ, সাবার-দাঁতযুক্ত বাঘ এবং আরও বিশাল দৈত্যযুক্ত ওম্বাটের মতো আরও হাস্যকর জেনার সহ বিশ্বের বেশিরভাগ প্লাস আকারের স্তন্যপায়ী প্রাণীকে নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছে a এবং জায়ান্ট বিভার যদিও এই সিদ্ধান্তে প্রলোভন পাওয়া যায় যে এই প্রাণীগুলি প্রথম দিকে বিলুপ্তির শিকার হয়েছিলহোমো স্যাপিয়েন্স, তারা সম্ভবত ধীরে ধীরে জলবায়ু পরিবর্তন এবং তাদের অভ্যস্ত আবাসগুলির অনভিজ্ঞ বিন্যাসের কাছেও প্রাণ হারায় (সম্ভবত কৃষকদের কৃষির জন্য পরিষ্কার-কাটা বন))

----------------------------------------------------------------------

Rxeb¥vkv

  জীবন্ত জিনিসগুলি বহিরাগত চাপ বা হুমকির একটি ধ্রুবক বাধার সম্মুখীন হয় যা তাদের বেঁচে থাকার এবং পুনরুত্পাদন করার ক্ষমতাকে চ্যালেঞ্জ করে। কোনও প্রজাতি যদি অভিযোজনের মাধ্যমে এই হুমকির সাথে সফলভাবে মোকাবেলা করতে অক্ষম হয়, তবে তারা বিলুপ্তির মুখোমুখি হতে পারে

একটি ক্রমাগত পরিবর্তিত শারীরিক পরিবেশের জন্য নতুন তাপমাত্রা, জলবায়ু এবং বায়ুমণ্ডলীয় অবস্থার সাথে খাপ খাইয়ে নিতে জীবের প্রয়োজন হয়। জীবন্ত জিনিসগুলি অবশ্যই আগ্নেয়গিরির বিস্ফোরণ, ভূমিকম্প, উল্কা ধর্মঘট, আগুন এবং হারিকেনের মতো অপ্রত্যাশিত ঘটনার সাথে মোকাবিলা করতে হবে

নতুন লাইফফর্মগুলি উত্থিত হয় এবং যোগাযোগ করে, প্রজাতিগুলিকে প্রতিযোগিতা, পূর্বাভাস, পরজীবীতা, রোগ এবং অন্যান্য জটিল জৈব প্রক্রিয়াগুলি মোকাবেলা করার জন্য একে অপরের সাথে খাপ খাওয়ানোর জন্য আরও চ্যালেঞ্জ করা হয়

সাম্প্রতিক বিবর্তনীয় ইতিহাসে, অনেক প্রাণী এবং অন্যান্য জীবের মুখোমুখি হুমকির মূলত একক প্রজাতির প্রভাব: মানুষ driven মানুষ এই গ্রহটিকে যে পরিমাণে পরিবর্তন করেছে তা অগণিত প্রজাতিগুলিকে প্রভাবিত করেছে এবং এত বিশাল আকারে বিলুপ্তি শুরু করেছে যে অনেক বিজ্ঞানী বিশ্বাস করেন যে আমরা এখন একটি গণ বিলুপ্তির (পৃথিবীর জীবনের ইতিহাসে ষষ্ঠ গণ বিলুপ্তি) অভিজ্ঞতা অর্জন করছি

প্রতিরোধযোগ্য হুমকি

যেহেতু মানুষ প্রকৃতই প্রকৃতির অঙ্গ, তাই মনুষ্যনির্মিত হুমকিগুলি কেবল প্রাকৃতিক হুমকির একটি উপসেট। তবে অন্যান্য প্রাকৃতিক হুমকির বিপরীতে, মনুষ্যনির্মিত হুমকি ' হুমকি যা আমরা আমাদের আচরণ পরিবর্তন করে প্রতিরোধ করতে পারি

মানুষ হিসাবে, আমাদের বর্তমান এবং অতীত উভয়ই আমাদের ক্রিয়াকলাপগুলির পরিণতিগুলি বোঝার একটি অনন্য ক্ষমতা রয়েছে। আমাদের ক্রিয়াগুলি আমাদের চারপাশের বিশ্বে কী প্রভাব ফেলেছে এবং কীভাবে এই ক্রিয়াকলাপগুলির পরিবর্তনগুলি ভবিষ্যতের ঘটনাগুলিকে পরিবর্তন করতে সহায়তা করতে পারে সে সম্পর্কে আরও জানতে সক্ষম are মানব ক্রিয়াকলাপগুলি পৃথিবীতে জীবনকে কীভাবে বিরূপ প্রভাবিত করেছে তা পরীক্ষা করে আমরা অতীতের ক্ষতিগুলিকে বিপরীত করতে এবং ভবিষ্যতের ক্ষতি রোধে পদক্ষেপ নিতে পারি

মানবসৃষ্ট হুমকির ধরণ

মানব-তৈরি হুমকিগুলি নিম্নলিখিত সাধারণ বিভাগে শ্রেণিবদ্ধ করা যেতে পারে:

           আবাসস্থল ধ্বংস এবং খণ্ডন - মানুষকে জমিটি কৃষিক্ষেত্র, নগর নগর উন্নয়নের জন্য, বাঁধ নির্মাণ বা অন্যান্য প্রয়োজনে ব্যবহার করতে সক্ষম করার জন্য একটানা একটানা আবাসস্থলের ধ্বংস বা বিচ্ছিন্নকরণ

           জলবায়ু পরিবর্তন - জীবাশ্ম জ্বালানী পোড়ানোর মতো মানবিক ক্রিয়াকলাপ পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলকে পরিবর্তিত করেছে এবং এর ফলে বিশ্বব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তন হয়েছে

           বিদেশী প্রজাতির ভূমিকা - প্রজাতির দ্বারা দখলকৃত অঞ্চলগুলিতে -নেটিভ প্রজাতির দুর্ঘটনাজনিত ইচ্ছাকৃতভাবে প্রবর্তনের ফলে অসংখ্য স্থানীয় প্রজাতির বিলুপ্তির ফলস্বরূপ ঘটেনি

           দূষণ - পরিবেশে মুক্তিপ্রাপ্ত দূষণকারী (কীটনাশক, ভেষজনাশক, ইত্যাদি) বিভিন্ন প্রাণীর দ্বারা আক্রান্ত হয়

           সম্পদের অতিরিক্ত শোষণ - খাবারের জন্য বন্য জনগোষ্ঠীর শোষণের ফলে জনসংখ্যা ক্র্যাশ হয়েছে (উদাহরণস্বরূপ ওভার-ফিশিং)

           শিকার, শিকার করা, বিপন্ন প্রজাতির অবৈধ বাণিজ্য - কিছু বিপন্ন প্রজাতি অবৈধ বাজারগুলির জন্য তাদের মূল্যকে লক্ষ্যবস্তু করে

           দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যু - গাড়ির হিট, জানালার সংঘর্ষ (পাখি), জাহাজের সাথে সংঘর্ষ (তিমি)

-------------------------------------------------------------

ইতিহাসের ভয়ংকর পাঁচ প্রাকৃতিক দুর্যোগ

পৃথিবীর ইতিহাসে ভয়ংকর কিছু প্রাকৃতিক দুর্যোগ বিভিন্ন সময়ে আঘাত এনেছিল যার ভয়াবহতার কথা চিন্তা এখনও মানুষ শিউরে ওঠে। ইতিহাসের ভয়ংকর সেই পাঁচ প্রাকৃতিক দুর্যোগের কথা থাকছে এখানে

# ইন্ডিয়া সাইক্লোন

১৮৩৯ সালের ২৫ নভেম্বর ভারতের অন্ধ্র প্রদেশে ইন্ডিয়া সাইক্লোন আঘাত আনে। এই সাইক্লোন উপকূলীয় এলাকায় ৪০ ফুট ঢেউ সৃষ্টি করেছিল যার ফলে বহু গ্রাম ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছিল। প্রায় ২০ হাজার মানুষ শুধু পানিতে ডুবেই মারা গিয়েছিল। আর সাইক্লোনে মোট মৃত্যুর সংখ্যা ছাড়িয়েছিল লাখের কোঠা

# ভোলা সাইক্লোন

ভোলা সাইক্লোন পৃথিবীর ইতিহাসেই সবচেয়ে ভয়ংকর ঘূর্ণিঝড় হিসাবে পরিচিত। ১৯৭০ সালের ১২ নভেম্বর এই ঘূর্ণিঝড় বাংলাদেশ (তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান) এবং পশ্চিম ভারতে আঘাত আনে। এই ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি করেছিল ভয়ংকর বন্যার। যার ফলাফল মানুষকে বহুদিন বহন করতে হয়েছিল। এই ভয়াবহ দুর্যোগে সে সময় প্রায় লাখ মানুষের মৃত্যু হয়েছিল

# সানজির ভুমিকম্প

১৫৫৬ সালের ২৩ জানুয়ারি উত্তর চীনের শানজি সানজি প্রদেশে আঘাত আনে আট মাত্রার ভুমিকম্প। মুহূর্তেই যেন প্রদেশ দুটি মাটির সাথে মিশে যায়। ভয়ংকর এই ভুমিকম্পে প্রায় লাখ ৩০ হাজার মানুষ মারা গিয়েছিল। ধারণা করা হয় সর্বনাশা এই ভুমিকম্পের পরে দুই প্রদেশের প্রায় ৬০ ভাগ জনসংখ্যা কমে গিয়েছিল

# ইয়েলো রিভার ফ্লাড

মানব জাতির ইতিহাসে ভয়ংকর বন্যা হিসাবে পরিচিত ইয়েলো রিভার ফ্লাড বা হলুদ নদীর বন্যা। এটি পৃথিবীর দ্বিতীয় ভয়ংকর প্রাকৃতিক দুর্যোগ হিসাবে পরিচিত। ১৮৮৭ সালের সেপ্টেম্বরে ইয়েলো রিভার ফ্লাডের ফলে চীনের ১১টি বড় শহর এবং শত শত গ্রাম ধ্বংস হয়ে যায়। লাখ লাখ মানুষ এই বন্যায় ঘরছাড়া হয়। ৫০ হাজার বর্গমাইল এলাকায় বন্যার পানি প্রবেশ করে এবং আনুমানিক লাখ থেকে ২০ লাখ মানুষ মারা যায়

# সেন্ট্রাল চায়না ফ্লাড

সেন্ট্রাল চায়না ফ্লাড ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়ংকর দুর্যোগ হিসাবে পরিচিত হয়ে আছে। এটি ১৯৩১ সালের জুলাই থেকে আগস্ট মাসে চীনে সংঘটিত হয়। সে সময়ে ব্যাপক বন্যার ফলে পানিতে ডুবে, রোগে ভুগে এবং অনাহারে . মিলিয়ন মানুষের মৃত্যু হয়। ন্যাশনাল ওশানিক এন্ড অ্যাটমসপেরিক এডমিনিস্ট্রেশনের তথ্য অনুসারে এই বন্যায় ৫১ মিলিয়নের বেশি বা চীনের এক চতুর্থাংশ জনসংখ্যা ক্ষতিগ্রস্থ হয়

-------------------------------------------------------------

বিলুপ্তি ও দুর্যোগ পৃথক বিষয় হলেও উভয়ের প্রত্যক্ষ প্রভাব মানুষ ও প্রকৃতিতে বিদ্যমান। বিলুপ্তি যেমন প্রাকৃতিক ভাবে সময়ের পরিক্রমায় ঘটে তেমনি দুর্যোগ সংঘঠিত বা হওয়ার ক্ষেত্রেও মানুষ ও প্রকৃতিতে বিরাট প্রভাব লক্ষ্য করা যায়।

পৃথিবীর ইতিহাসের ভয়ানক কিছু দুর্ভিক্ষের ইতিবৃত্ত

পৃথিবীর ইতিহাসে যেসব কারনে মানুষ সবচেয়ে বেশি মারা গেছে তাদের মধ্যে বড় একটি কারন দুর্ভিক্ষ। দুর্ভিক্ষ প্রাকৃতিক দুর্যোগ গুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভয়ানক নির্মম। একটি দুর্ভিক্ষে গ্রামের পর গ্রাম, শহরের পর শহর জনশূন্য হয়ে যায়। পড়ে থাকে নিথর কংকালসার দেহ। আর সেই দেহগুলো পরিণত হয় কাক আর শকুনদের খাদ্যে। চলুন জেনে আসা যাক পৃথিবীর ইতিহাসে ভয়াবহ কিছু দুর্ভিক্ষের কাহিনী

. চীনের মহাদুর্ভিক্ষ (১৯৫৯১৯৬১)

১৯৫৯ থেকে ১৯৬১ সাল পর্যন্ত চীনে সংঘটিত দুর্ভিক্ষটি ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি নির্মম ভয়ানক দুর্ভিক্ষ। গবেষকদের হিসাবমতে দুর্ভিক্ষে প্রায় কোটি এবং প্রখ্যাত ইতিহাসবিদ ফ্রানক ডিকোটারের মতে প্রায় কোটি ৫০ লক্ষ লোকের মৃত্যু হয়। সরকারি হিসাব মতে চীনের সবচেয়ে জনবহুল প্রদেশ সিচুয়ান প্রদেশে প্রতি সাতশো জনের মধ্যে এগারো জন মানুষ দুর্ভিক্ষে মারা যায়

চীনের মহাদুর্ভিক্ষ সম্পর্কে জিন জিয়াং এর একটি সরকারি দলের সচিব ইয়ু দিহং বলেন,

আমি এক গ্রামে গিয়ে ১০০ লাশ দেখি, তারপর অন্য গ্রামে অন্য ১০০ লাশ দেখেছি। কেউ তাদের দিকে মনোযোগ দেয়নি। লোকেরা বলে যে কুকুর লাশ খাচ্ছিল। কিন্তু তা সত্য না। কারন তার আগেই মানুষ কুকুর খেয়ে ফেলেছিল।

দুর্ভিক্ষের জন্য দায়ী করা হয় প্রতিকূল আবহাওয়া, সামাজিক চাপ, অর্থনৈতিক অবস্থা এবং সরকারি বিধান দ্বারা আরোপিত কৃষিতে আমূল পরিবর্তন। চীনা কমিউনিস্ট পার্টির চেয়ারম্যান মাও সে তুং ক্ষমতায় আসার পর কৃষিতে ব্যক্তিমালিকানা বন্ধ করে বিরাট পরিবর্তন আনেন। উক্ত নীতি মেনে চলতে ব্যর্থ হলে চীনা জনগণের উপর নেমে আসতো নানা নিপীড়ন। সরকার আরোপিত নীতি ব্যবসার পরিপ্রেক্ষিতে সামাজিক চাপ রাষ্ট্রে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করে। সময় সমবায় চাষ ব্যক্তিগত খামার নিষিদ্ধ করা হয়। লক্ষ লক্ষ কৃষককে জোরপূর্বক লৌহ ইস্পাত নির্মাণে বাধ্য করা হয়। ফলে দেখা দেয় খাদ্য সংকট এবং নেমে আসে ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ

. ১৯০৭ সালে চীনে দুর্ভিক্ষ

১৯৫৯ সালের আগে চীনের জনগণের আরো একবার করাল দুর্ভিক্ষের অভিজ্ঞতা হয় ১৯০৭ সালে। বলা হয়ে থাকে পৃথিবীর ইতিহাসে এটি ২য় ভয়ংকর দুর্ভিক্ষ। সময় প্রায় ২৫ মিলিয়ন মানুষ মারা যায়। গড়ে প্রতিদিন প্রায় ৫০০০ মানুষ খাদ্য অভাবে অনাহারে মারা যায়

দুর্ভিক্ষের কারন হিসাবে দায়ী করা হয় সে সময়ে ঘটে যাওয়া ভয়াবহ বন্যাকে। পূর্ব-মধ্য চীন সে সময়ে এক মারাত্মক ঝড় বন্যার সম্মুখীন হয়। সময় ফসলের প্রায় শতভাগ বন্যার কারনে নষ্ট হয়ে যায়। ফলে নেমে আসে ভয়াবহ খাদ্য সংকট এবং দেখা যায় ইতিহাসের দ্বিতীয় করুণ দুর্ভিক্ষ

. ভারতীয় উপমহাদেশে ছিয়াত্তরের মন্বন্তর (১৭৭০)

বাংলা ১১৭৬ সালে দুর্ভিক্ষ ঘটেছিলো বলে এর নাম ছিয়াত্তরের মন্বন্তর বলা হয়। অত্যধিক বৃষ্টিপাত বন্যার করাল গ্রাসে প্রায় সব ফসল নষ্ট হয়। সে সময় মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্বের ফলে অবস্থার চরম অবনতি ঘটে। ১৭৬৮ সালে আদায়কৃত রাজস্ব ১৫.২১ মিলিয়ন রুপির চেয়ে ১৭৭১ সালে আদায়কৃত রাজস্বের পরিমাণ ,২২,০০০ রুপি বেশি ছিল, অথচ এর আগের বছর দুর্ভিক্ষ ঘটে যায়। এভাবে মুনাফা লুট অতিরিক্ত রাজস্ব আদায়ের উদ্দেশ্য চরিতার্থ করার কারণে জনমানুষের ভোগান্তি চরমে পৌঁছে।  পরিণতিতে মারাত্মক দুর্ভিক্ষ পীড়িত এলাকাগুলো হয়ে পরে জনশূন্য

এছাড়াও ১৭৮৩ থেকে ১৭৮৬ সালে ভারতীয় উপমহাদেশে অনেক গুলো দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়। বাংলায় সেই সময় তুলনামূলক কম দুর্দশা থাকলেও বোম্বে, মাদ্রাজ, মহীপূর, পাঞ্জাব এবং উত্তর পূর্বাঞ্চলের কিছু অঞ্চল মারাত্মক দুর্ভিক্ষের কবলে পরে। সময় খাদ্যের অভাবে প্রায় কোটি মানুষ মারা যায়

. বাংলায় পঞ্চাশের মন্বন্তর (১৯৪৩)

১৯৪৩ সালে বাংলায় দুর্ভিক্ষটি পঞ্চাশের মন্বন্তর (বাংলা ১৩৫০) নামে পরিচিত। মন্বন্তরে বাংলাজুড়ে প্রায় ৩০ লাখ মানুষ না খেয়ে মারা যায়

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জাপান প্রতিবেশী দেশ মায়ানমার (তৎকালীন নাম বার্মা) দখল করে নেয়ার পর তেতাল্লিশের মন্বন্তর শুরু হয়। ওই সময় বার্মা ছিল চাল আমদানির বড় উৎস। ভারতে নিয়োজিত ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসক সেনা যুদ্ধে নিয়োজিত কর্মীদের বিপুল পরিমাণ খাদ্য মজুত করা হয়। ফলে অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যায় চালের দাম। সে সময় জাপানের ভারত দখলের একটা সম্ভাবনা ছিল। তাই দখলের পর খাদ্য যাতে শত্রুর হাতে না যায় তাই ব্রিটিশ সরকার আগাম কিছু ব্যবস্থা নেয়।  বাংলাজুড়ে নৌকা গরুর গাড়ী বাজেয়াপ্ত নয় তো ধ্বংস করে ফেলা হয়। এতে বিতরণ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ে। সারা বাংলায় খাদ্যের হাহাকার পড়ে যায়। পথে প্রান্তরে না খেয়ে লুটিয়ে পড়তে থাকে মানুষ। বুভুক্ষু হাজার হাজার মানুষ একমুঠো অন্নের জন্য  ধাই করছিল কলকাতার দিকে। দেখা গেছে, এসব অভাগা দলে দলে পথের ওপর পড়ে ধুঁকছেন আর আবর্জনার পাশে উচ্ছিষ্টে ভাগ বসাতে পরস্পর লড়ছেন। একই সময় ব্রিটিশ কর্মকর্তা এবং তাদের তোষামুদে অবস্থাপন্ন ভারতীয় লোকজন বাড়িতে বসে ভূড়িভোজ করছেন

. রাশিয়ার দুর্ভিক্ষ (১৯২১১৯২২)

১৯২১ সালের রাশিয়ার দুর্ভিক্ষের কারন ছিল হঠাৎ রাজনৈতিক পরিবর্তন প্রতিকূল আবহাওয়া। সময় ৫০ লক্ষ মানুষ মারা যায়

সে সময় খাবারের জন্য মানুষ অত্যন্ত ঘৃণ্য কাজ করতেও বাধ্য হয়েছিল। পোকামাকড়, কাদামাটি, গাছের পাতা, মৃত প্রাণী, এমনি মানুষের মাংস পর্যন্ত খেয়েছে অনেকে। বেঁচে থাকার তাগিদে অনেকে নিজ সন্তানকে হত্যা করে পর্যন্ত মাংস খেয়েছে। অনেকে আবার কবর খুঁড়ে মৃত মানুষের মাংস খেয়েছে। মানুষ হত্যার পুলিশি রিপোর্ট থানায় অগ্রাহ্য করা হত সে সময়, কারন তখন মানুষ হত্যাকে বেঁচে থাকার একটি উপায় হিসেবে ধরে নেয়া হত

. উত্তর কোরিয়ার দুর্ভিক্ষ (১৯৯৪১৯৯৮)

খুব সম্প্রতি ঘটে যাওয়া দুর্ভিক্ষ কবলিত দেশ গুলোর মধ্যে উত্তর কোরিয়া একটি। ১৯৯৪ থেকে ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত উত্তর কোরিয়া একটি ভয়াবহ দুর্ভিক্ষের সম্মুখীন হয়। উত্তর কোরিয়ার মোট জনসংখ্যা . কোটির মধ্যে প্রায় ৩৫ লক্ষ মানুষ মারা যায়

অর্থনৈতিক ভুল ব্যবস্থাপনা এবং সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে সহযোগীতা হারানো ছিল দুর্ভিক্ষের মূল কারন। ছাড়া ক্রমাগত বন্যা খরা অন্যতম কারন বলে মনে করা হয়

. ভিয়েতনামে দুর্ভিক্ষ (১৯৪৪১৯৪৫)

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধেদখলে থাকাকালীন সময়ে ভিয়েতনাম এক নির্মম দুর্ভিক্ষের সম্মুখীন হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ফ্রান্স জাপানের দখলদারিত্বকেই মূলত দুর্ভিক্ষের জন্য দায়ী করা হয়। একদিকে জনগণ অনাহারে মরছে, অপরদিকে ফ্রান্স এবং জাপান পাওয়ার স্টেশনে জ্বালানীর জন্য ধান এবং গম ব্যবহার করে। ফ্রান্সের দখলে থাকাকালীন ভিয়েতনামে প্রশাসন ব্যবস্থা পুনর্গঠন করা হয় এবং জোরপূর্বক ফ্রান্স ভিয়েতনাম থেকে অর্থ নিয়ে যেতো। ছাড়া ১৯৪৪ সালের আগস্ট মাসে ভয়াবহ বন্যায় ব্যাপকহারে ফসলের ক্ষতি হয়। এসব কারনে ভিয়েতনামে দুর্ভিক্ষ হয় এবং দুর্ভিক্ষে প্রায় ২০ লক্ষ মানুষ মারা যায়

 -----------------------------------------------------------------

ষষ্ঠ গণবিলুপ্তির পথে পৃথিবী

আর আসছে, আসবে নয়। ভয়ঙ্কর সর্বনাশের প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে পৃথিবীতে। শুরু হয়ে গিয়েছে প্রাণের গণবিলুপ্তির সময়।

সাড়ে ছয় কোটি বছর আগে ক্রেটাসিয়াস যুগের পর প্রাণের গণহারে বিলুপ্তির ষষ্ঠ পর্যায় শুরু হয়ে গিয়েছে খুব কম করে হলেও, ৭০০ বছর আগে। ১৫০০ শতাব্দী থেকেই

পৃথিবীর চেনা, জানা ২০ লক্ষ প্রাণী ও উদ্ভিদের সাড়ে সাত থেকে ১৩ শতাংশই ইতিমধ্যেই গণহারে বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছে। পৃথিবী থেকে হারিয়ে গিয়েছে চিরতরে। যে ভাবে হারিয়ে গিয়েছে ডাইনোসররা। হারিয়ে গিয়েছে আরও অসংখ্য প্রাগৈতিহাসিক প্রাণী ও উদ্ভিদ। যে হারে স্তন্যপায়ী, পাখি ও উভচররা হারিয়ে যাচ্ছে তাদের চেয়ে অনেক বেশি হারে বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছে পৃথিবীর অমেরুদণ্ডী প্রাণী। যারা পৃথিবীর জীববৈচিত্র্যের মোট প্রাণীর ৯৭ শতাংশ

সাম্প্রতিক একটি গবেষণায় এই উদ্বেগজনক তথ্য বেরিয়ে এসেছে। গবেষণাটি প্রকাশিত হয়েছে আন্তর্জাতিক জীববিজ্ঞান গবেষণা পত্রিকা ‘বায়োলজিক্যাল রিভিউজ’-এ। গত সোমবার

পৃথিবীতে শেষবার প্রাণের গণবিলুপ্তি ঘটেছিল সাড়ে ছয় কোটি বছর আগে। ক্রেটাসিয়াস যুগের প্রায় শেষ পর্যায়ে। পৃথিবীর পঞ্চম গণবিলুপ্তির সেই অধ্যায়টি ‘ক্রেটাসিয়াস-টার্সিয়ারি যুগ’ নামে সুপরিচিত। ওই সময়েই পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত হয়েছিল ডাইনোসর-সহ বহু প্রাগৈতিহাসিক প্রাণী ও উদ্ভিদ। পৃথিবীতে গণবিলুপ্তির পর্যায়গুলির মধ্যে দ্রুততম পর্ব ছিল সেই ষষ্ঠ গণবিলুপ্তির সময়। মাত্র ২৫ লক্ষ বছরের মধ্যেই পৃথিবীর যাবতীয় প্রাণের গণবিলুপ্তি ঘটেছিল ওই সময়

গবেষণাপত্রটি জানিয়েছে, পৃথিবী থেকে প্রাণী ও উদ্ভিদের বিলুপ্তি নিয়েদ্য ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব নেচার (আইইউসিএন)’ যে লাল তালিকা (রেড লিস্ট) প্রকাশ করেছে, তাতে পৃথিবীর ষষ্ঠ গণবিলুপ্তির প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার ছবিটা স্পষ্ট হয়ে ওঠেনি। তালিকায় স্তন্যপায়ী, পাখি, উভচররা বেশি প্রাধান্য পাওয়ায়। আর অমেরুদণ্ডী প্রাণীদের সেই তালিকায় ততটা হিসাবের মধ্যে না ধরায়। আইইউসিএন-এর হিসাবে পৃথিবীর প্রাণের ৪০ হাজার প্রজাতির প্রজাতি বিলুপ্ত হয়ে যাওয়ার মুখে। এদের মধ্যে ৪১ শতাংশ উভচর, ২৬ শতাংশ স্তন্যপায়ী, ১৩ শতাংশ পাখি, ৩৭ শতাংশ হাঙর ও ২১ শতাংশ সরীসৃপ

গবেষকদের বক্তব্য, আইইউসিএন-এর লাল তালিকায় থাকা বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া ও বিপদাপন্ন প্রাণীদের পরিসংখ্যানে অমেরুদণ্ডী প্রাণীদের ততটা হিসাবের মধ্যে ধরা হয়নি। তা ধরা হলে গত ৭০০ বছরে পৃথিবীর তাবৎ জীববৈচিত্র্যের অনেক বেশি সংখ্যক প্রজাতি বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছে। যাদের মধ্যে অমেরুদণ্ডীরা সংখ্যায় অনেক বেশি। যদিও এই অমেরুদণ্ডীরা পার্থিব জীববৈচিত্র্যের অনেকটা অংশ জুড়ে রয়েছে প্রজাতির সংখ্যায়, পরিমাণে

আইইউসিএন-এর লাল তালিকা অনুযায়ী, গত ৭০০ বছরে (১৫০০ শতাব্দী থেকে) স্তন্যপায়ী ও পাখিদের বহু প্রজাতি বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছে। যা মোট প্রাণের দেড় শতাংশ

গবেষকদের বক্তব্য, অমেরুদণ্ডীদের হিসাবে ধরলে এই হার অনেক বেশি। অন্তত সাড়ে সাত থেকে ১৩ শতাংশ। যা প্রমাণ করছে ৭০০ বছর আগেই পৃথিবীতে ষষ্ঠ গণবিলুপ্তির পর্যায় শুরু হয়ে গিয়েছে।  সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা

নৃতাত্ত্বিক বিলুপ্তির জন্য দায়ী মানুষ। জলবায়ু পরিবর্তন, বনভূমি ধ্বংস, দূষণ এবং শিল্প-সংক্রান্ত কৃষিকাজ এর অন্যতম কারণ। কয়েক দশকের মধ্যে ধ্বংসের মুখে প্রায় ১০ লাখ প্রজাতি। বিশ্বের সব প্রজাতির প্রায় তিন চতুর্থাংশ আগামী ৩০ লাখ বছরের মধ্যে বিলুপ্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

খাদ্য সরবরাহে টান পড়বে। পরাগমিলনের উপর খাদ্য সুরক্ষা নির্ভর করছে, মত দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ার ফ্লিন্ডার্স বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্লোবাল ইকোলজির অধ্যাপক কোরে ব্র্যাডশর। মৌমাছি মারা গেলে ভেঙে পড়বে কৃষি ব্যবস্থা। ক্ষতিকারক পোকামাকড়ের পরিমাণ বাড়বে। উপকূলবর্তী এলাকায় মাছ চাষে সমস্যা হবে। বন্যা এবং খরার ফলে সাহারা-সংলগ্ন আফ্রিকা এবং দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার একাংশ চরম ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে

ডব্লু ডব্লু এফ ইন্টারন্যাশনালের তরফে কোলম্যান ও ক্রায়োডেনের মত, মাটির গুণমান কমবে কারণ গণবিলুপ্তিতে উপকারী অণুজীবের মৃত্যু হবে। মাটির উর্বরতা কমে প্রভাব পড়়বে কৃষিতে৷ সারা বিশ্বের শুদ্ধ পানীয় জলের অধিকাংশ আসে জলাভূমি থেকে। হিমালয়সংলগ্ন এলাকার প্রায় দুই কোটি মানুষ এই পানির উপর নির্ভরশীল। বিশ্বজুড়ে পানীয় জলেও মারাত্মক টান পড়বে

বনভূমি ধ্বংসের ফলে বৃষ্টিপাতের ধরন বদলেছে। জাতিসংঘের মত, ২০১৫ থেকে বার্ষিক প্রায় ২.৮ কোটি একর বনভূমি ধ্বংস হয়েছে। কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমাণ বেড়েছে। স্টকহোম রিজিলেন্স সেন্টার ফর রিসার্চের পরিবেশবিজ্ঞানী কার্ল ফক বলেন, বাস্তুতন্ত্রকে সবথেকে বেশি সমস্যয় ফেলেছে মানুষ। জীববৈচিত্র্য ধ্বংসের সতর্কতা জারি করেছেন বিজ্ঞানীরা। শুধু তাই নয়, বনভূমি ধ্বংস হচ্ছে। বন্যপ্রাণী ও মানুষ কাছাকাছি চলে আসার ফলে প্রাকৃতিক পরিবেশে ব্যাঘাত ঘটে মহামারির আশঙ্কাও বেড়েছে

সংরক্ষণে জোর দিতে না দিলে আগের তুলনায় আরও বেশি প্রজাতি ধ্বংস হত, মত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজার্ভেশন অফ নেচারের (আইইউসিএন) প্রধান বিজ্ঞানী টমাস ব্রুকসের। এই প্রসঙ্গে আইইউসিএনের লাল তালিকার কথা উল্লেখ করেন তিনি। ওয়াইল্ড লাইফ কনজার্ভেশন সোসাইটির "৩০-এ ৩০" চুক্তির কথা বলা হয়েছে। এর ফলে ৩০% স্থলভূমি এবং সমুদ্র ২০৩০ সালের মধ্যে সংরক্ষণের আওতায় চলে যাবে। সূত্র: ডয়চে ভেলে

প্রজাতির ৬ষ্ঠ গণবিলুপ্তি প্রসঙ্গে পল এরিখ

কয়েক লক্ষ বছর ধরে সগর্বে পৃথিবী রাজত্ব করা মনুষ্য প্রজাতি ভবিষ্যতে নিশ্চিহ্ন হয়ে যেতে পারে এমনটা শুনলে সকলেরই চক্ষু চড়কগাছ হওয়ার কথা! কিন্তু আদতে এমন সতর্কবাণীই শুনিয়েছেন স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা। এর আগে পৃথিবীতে প্রাণীকূলের গণবিলুপ্তি ঘটেছিল আজ থেকে ৬ কোটি ৫০ লাখ বছর আগে অতিকায় ডাইনোসরের অস্তিত্ব নিশ্চিহ্ন হওয়ার মধ্যে দিয়ে। ধারণা করা হয়, তখন অতিকায় গ্রহাণুপুঞ্জ পৃথিবীতে আঘাত হানার কারণে সৃষ্টি হয়েছিল ‘নিউক্লিয়ার উইন্টার’ এর। অর্থাৎ গ্রহাণু পৃথিবীপৃষ্ঠে সজোরে আছড়ে পড়ার কারণে পৃথিবীপৃষ্ঠের চারপাশে ঘন মেঘের স্তর সৃষ্টি হয়েছিল, যা পৃথিবী পৃষ্ঠে সূর্যের আলো পৌঁছতে বাধা দেয়। ফলশ্রুতিতে কুয়াশাচ্ছন্ন পরিবেশের কারণে খাদ্যাভাবে বিলুপ্তি ঘটে ডাইনোসরের।
গত ১৯ জুন, ২০১৫ তারিখে সায়েন্স অ্যাডভান্সেস সাময়িকীতে প্রকাশিত স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণা নিবন্ধে বলা হয়েছে, মেরুদণ্ডী প্রাণীরা স্বাভাবিকের চেয়ে ১১৪ গুণ দ্রুত হারে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। এই বিলীয়মান সারির প্রথমেই মনুষ্য প্রজাতি থাকতে পারে। বিজ্ঞানীরা সতর্ক বাণী করেছেন পৃথিবীর প্রাণীকূল ষষ্ঠবারের মতো গণবিলুপ্তির শিকার হতে যাচ্ছে, আর এটি ঘটবে স্বাভাবিকের চেয়ে ১০০ গুণ বেশি হারে। এই বিষয়ে আমরা যোগাযোগ করি গবেষণা কাজের সাথে সম্পর্কিত বিজ্ঞানীদের সাথে। ই-মেইলের মাধ্যমে কসমিক কালচারকে দেয়া সাক্ষাৎকারে এ বিষয়ে তাদের একান্ত ভাবনা প্রকাশ পায়

পল এরিখ
Paul R. Ehrlich
Bing Professor of Population Studies, Stanford University
President, Center for Conservation Biology Department of Biology
Adjunct Professor, University of Technology, Sydney
Honorary Professor, Sichuan University

সাক্ষাৎকার :

·   আপনি কখন এবং কিভাবে ধারণা করলেন যে মনুষ্য সৃষ্ট প্রজাতির ৬ষ্ঠ গণ বিলুপ্তি ঘটতে যাচ্ছে? এটি কি পর্যবেক্ষণগত কোন ফলাফল ছিল নাকি অন্য কোন বিষয়ে গবেষণা করার সময়ে এটি ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছে? এই গবেষণার ভিত্তি কি?
বিজ্ঞানীরা গত শতাব্দী থেকেই বিলুপ্তির বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করে আসছেন। আমি সর্বপ্রথম ১৯৮১ সালে Extinction নামে একটি বই লিখি। আমাদের বর্তমান গবেষণাটি ছিল বিলুপ্তির নেপথ্য হার নির্ধারণ সম্পর্কে, যা প্রাকৃতিকভাবে ঘটা বিলুপ্তির মধ্যকার জীবাশ্ম বা ফসিল থেকে পাওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে বের করা হয়। আমরা গবেষণায় পেয়েছি কিভাবে বিপুল সংখ্যক প্রজাতি অস্বাভাবিকহারে বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে, যা কিনা ৬ষ্ঠ গণ বিলুপ্তিতে প্রবেশের ইঙ্গিতবাহী

·   ৬ষ্ঠ গণ বিলুপ্তির সম্পূর্ণভাবে মানুষের সৃষ্টি বলে দাবি করা হলেও এর পেছনে কি অন্য কোন কারণ রয়েছে?
আদৌ অন্য কোন কারণ নেই, প্রজাতির ৬ষ্ঠ গণ বিলুপ্তির জন্য মানুষ সম্পূর্ণভাবে দায়ী

·      আমরা জানি ৫ম গণ বিলুপ্তির মধ্যে দিয়ে ডাইনোসর পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত হয়ে গেছে এবং তার পরবর্তীতে প্রাকৃতিক বাছাইয়ের মাধ্যমে মানুষই সর্বোচ্চ প্রজাতি হিসেবে বর্তমানে টিকে রয়েছে। তাহলে প্রজাতির ৬ষ্ঠ গণ বিলুপ্তির পরে ঠিক কি ঘটবে বলে আপনি মনে করেন?
এই বিষয়ে কেউই ভবিষ্যদ্বাণী করতে পারে না। তবে আমি ব্যক্তিগতভাবে আশা করি কিছু মানুষ হয়তো এই বিলুপ্তির হাত থেকে নিজেদের রক্ষা করতে সক্ষম হবে

·      প্রজাতির ৬ষ্ঠ গণ বিলুপ্তি কি অবশ্যম্ভাবী? এই গণ বিলুপ্তি রোধ বা ঠেকানোর কোন কার্যকরী উপায় কি রয়েছে?
আমরা কঠোরভাবে এবং দ্রুততার সাথে নিজেদের অভ্যেসগুলো নিয়ন্ত্রণ করতে পারলে হয়তো এটিকে রোধ করা সম্ভব। বিপুলসংখ্যক মানুষের মাত্রাতিরিক্ত পরিবেশের ক্ষতিসাধনই এই বিলুপ্তির মূল কারণ

·      ২০০৪ সালের দিকে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রজাতির ৬ষ্ঠ গণ বিলুপ্তি সম্পর্কে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছিল। সেটি কি বর্তমান গবেষণা থেকে ভিন্নতর ছিল অথবা দুইয়ের মধ্যে কোন সাদৃশ্য রয়েছে কি?
বর্তমান গবেষণার ফল এটাই নির্দেশ করে পূর্বতন ধারণাটি সঠিক ছিল এবং আমরা তাই বিলুপ্তির দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছি

·      মনুষ্য সৃষ্ট ৬ষ্ঠ গণ বিলুপ্তির কারণ হিসেবে কোন বিষয়টিকে আপনি উল্লেখযোগ্য মনে করছেন? এক্ষেত্রে বাংলাদেশ বা উন্নয়নশীল দেশগুলোর কি ভূমিকা থাকতে পারে?
প্রাণীর আবাসন ধ্বংস করা, জলবায়ুগত ব্যাঘাত সৃষ্ঠি, বিভিন্নভাবে বিষাক্ততা ছড়ানো, অতি চাষ প্রভৃতি বিষয়গুলোও এই বিলুপ্তির পেছনে ক্রিয়াশীল। অনুন্নত দেশগুলো ক্ষতিসাধনের ব্যাপারে উন্নত দেশের মতো এক্ষেত্রে ভূমিকা না রাখলেও তাদের জনসংখ্যা হ্রাস ও ধ্বংসের প্রবণতা কমিয়ে এনে গণ বিলুপ্তি রোধের জন্য ভূমিকা রাখতে পারেঅতি দ্রুত জীবাশ্ম জ্বালানী ব্যবহার বন্ধ করা, সর্বত্র নারীর সাম্যতা ও সুযোগ নিশ্চিত করা, আধুনিক গর্ভনিরোধক ব্যবহার, সকল যৌনসক্ষম ব্যক্তিপর্যায়ে গর্ভপাতকে সমর্থন দেয়া প্রভৃতিভাবে নিজ নিজে ক্ষেত্রে আমরা অবদান রাখতে পারি

·      ৬ষ্ঠ গণ বিলুপ্তি রোধে আপনি ব্যক্তিগতভাবে কোন উদ্যোগে শামিল হয়েছেন কি?
বিজ্ঞানী, মানবতকর্মী, নাগরিক সমাজের সমন্বয়ে The Millennium Alliance for Humanity and the Biosphere (MAHB) নামে আমাদের একটি উদ্যোগ রয়েছে। এখানে এই বিষয়ে বিভিন্ন আলোচনার সুযোগ রয়েছে, চাইলে যেকেউ এর সাথে যুক্ত হতে পারেন

---------------------------------------------------------------------------------

(*) তথ্যসূত্র : ইন্টারনেট

 

-    জাহিদ আহমেদ ও তার স্মৃতি পরিষদ ।

 

সালাত আদায় ও অতপর :

 সালাত আদায় ও অতপর : ---------------------------------------- বেশ কিছুদিন আগে , ঢাকার সংসদ ভবন রো‌ডে আসাদ‌ গেইট যাওয়ার প‌থে বা‌সে ব‌সে‌ছি‌ল...